স্বগতোক্তি
" আপাততঃ ছোট শিশিতে এ গান ভরে / ভাসিয়ে দিচ্ছি সময়ের দরিয়ায় "
Saturday, 17 August 2024
বাৎসল্য
একটা অভিমানী চিঠি, মানুষের সাধ্য কি তার কাছে যায় ?
আরো সব অভিমানী চিঠিরাই তার সাথে দোস্তি পাতায়;
তোমার কাছেই ওকে রেখে দিও, একটু আদর ও পাক
দুগা’লে বিনুনি করে ইস্কুলবাসে উঠে যাক
ওকে শিখিয়ে দিও যা কিছু শেখার ছিল মাটি-পৃথিবীর কাছে,
ও দেখেনি, তবু ওকে দেখে যায় একজন, দূর থেকে;
Sunday, 3 April 2022
কালের সংক্ষিপ্ত, ব্যক্তিগত ইতিহাস
Saturday, 16 May 2020
আমার কিছু ব্যক্তিগত সম্পত্তি
প্রথমে সেইসব বরফটুকরোর প্রসঙ্গে আসা যাক;
ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আমি ওগুলোকে পেয়েছিলাম-
বকুলপুরের মাঠে খেলতে গিয়ে বল লাগা চোটের ওপর
নরম আদরে ওগুলোকে বুলিয়ে দিয়েছিলেন
মাঠের পাশের বাড়ির নাম-না-জানা-গোলগাল-মহিলা
পরে আমি সেগুলোকে অবলীলায় বেচে দিয়েছি।
এরপর আসবে সেই সিগারেটটার কথা;
সঞ্জীবদের বাড়ির পাঁচিলটার আড়ালে, সন্তর্পণে
সদ্য গোঁফ ওঠা ঠোঁটে যেটা চেপে ধরতেই
সাইকেল থেকে লাফ দিয়ে নেমে এসে
পাশের পাড়ার গোপালকাকা,
আমাকে কান ধরে হিড়হিড় করে নিয়ে গেলেন
আমার বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে;
অবশ্য বলতে হবে সেই সিগারেট টুকরোটা বিক্রি করে
খুব বেশি টাকা পাওয়া যায়নি।
তারপর সেইসব অমোঘ জলকণা থাকবে;
এসপ্ল্যানেড থেকে মৌলালি-
বৃষ্টি পড়েছিল শুধু আমাদের উদ্দেশ্যে;
নীলামে, সরিতা আর আমার গায়ে ঝরে পড়া
বৃষ্টির ফোঁটাগুলোর দাম উঠেছিল চড়চড় করে।
কিন্তু মুশকিল হল এইভাবে বেচতে বেচতে,
আমি প্রায় সবকিছু বেচে ফেলেছি।
এখন আমার কাছে পড়ে রয়েছে
শুধু বাপ ঠাকুরদার আমলের একটা হাঁসুয়া-
যদি তাতে বিস্তর জং ধরে গেছে।
(কী বলছেন? এই পেনটা? যেটা দিয়ে কবিতা লিখছি?
ও হ্যাঁ হ্যাঁ! মাফ করবেন, ওটাও পড়ে আছে বটে!
ওটাকেও হিসেবের মধ্যে ধরে নিন)।
ফলে ঠিক করেছি, এগুলোকে আমি
আর কিছুতেই বিক্রি করব না, অনেক টাকা দিলে না।
যতটা টাকা থাকলে বউকে উড়োজাহাজ, টর্পেডো কিম্বা
বুলডোজার কিনে দেওয়া যায়,
যতটা টাকা থাকলে আনন্দবাজারে ছবি বেরয়,
যতটা টাকা থাকলে শিল্পবোদ্ধা হওয়া যায়,
কিংবা যতটা টাকা থাকলে জনগণকে সেবা আর
শিশুগণকে হত্যা করা যায়-
ততটা টাকা থাকলেও কেউ এগুলোকে
আমার কাছ থেকে কিনে নিতে পারবে না।
আমি শুধু বিনিময় প্রথায় রাজি আছি!
প্রত্যেক ঘর থেকে ভেসে আসা ভাতের গন্ধের,
বা একসঙ্গে অসংখ্য নানা রংয়ের শিশুর
হাসিমুখের বিনিময়ে আমি অনায়াসে
হাঁসুয়াটাকে দিয়ে দিতে পারি।
অবশ্য পেনটাকে আমি তখনও ছেড়ে দেব না;
ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও না!
তখনও আমি পেনটাকে ভেতরের বুকপকেটে
যত্ন করে লুকিয়ে রেখে দেব।
ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলুপ্তির যুগে,
ওটাই হবে আমার শেষ ব্যক্তিগত সম্পত্তি।
[বিকল্প পত্রিকায় প্রকাশিত]
ফটো সূত্রঃ https://fineartamerica.com/featured/fountain-pen-sketch-martina-fagan.html
Wednesday, 13 May 2020
অনুবাদঃ নাসদীয় সুক্ত ( ঋকবেদ, দশম মণ্ডল, ১২৯ সংখ্যক সুক্ত)
তখন অস্তিত্ব ছিল না, অনস্তিত্বও না
বাতাস ছিল না, বাতাসের ওপারে মহাকাশ ছিল না
কী আবৃত করেছিল সবকিছুকে? কোথায়? কার নির্দেশে?
সবার প্রথমে আবির্ভাব ঘটল কামনার,
মানসজাত সেই আদিম সৃষ্টিবীজ;
যেসব ঋষিরা খুঁজেছেন নিজেদের অন্তরে-
প্রকাশিত হল যা ছিল ওপরে, নীচে আর সবদিকে
উর্বর সৃজনীশক্তি সক্রিয় ছিল সর্বত্র
নীচে ছিল স্থিতি আর ওপরে স্বতঃস্ফূর্ততা
তিনি, যিনি উচ্চতম আকাশ থেকে লক্ষ্য করে চলেছেন
তিনি জানেন, অথবা হয়ত তিনিও জানেননা।
ফোটো সূত্রঃ https://www.nytimes.com/2020/01/30/science/nasa-spitzer-space-telescope.html